মোঃ নাঈম উদ্দীন স্টাফ রিপোর্টার, চুয়াডাঙ্গা। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের আয়োজনে আজ এক প্রাণবন্ত পরিবেশে নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম-এর সাথে জেলার ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার মহোদয় চুয়াডাঙ্গার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং জনবান্ধব পুলিশিং নিশ্চিত করতে সাংবাদিকদের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন।
আজ ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিঃ তারিখ বিকাল ০৩:০০ ঘটিকায় পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম পর্যায়ক্রমে উপস্থিত জেলার সকল জ্যেষ্ঠ ও তরুণ সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি, কুশল ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
তিনি চুয়াডাঙ্গায় তার নতুন কর্মস্থলে যোগদানের অভিজ্ঞতা এবং জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণার কথা তুলে ধরেন।
সভায় পুলিশ সুপার মহোদয় জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও গতিশীল ও উন্নত করার জন্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
তাঁর বক্তব্যে নিম্নলিখিত অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে:
জনবান্ধব পুলিশিং: তিনি কাঙ্ক্ষিত জনবান্ধব পুলিশিং নিশ্চিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, যাতে সাধারণ মানুষ কোনো প্রকার দ্বিধা ছাড়াই পুলিশের কাছে আসতে পারে এবং দ্রুত সেবা পেতে পারে।
মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধ: সীমান্তবর্তী জেলা হিসেবে মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এর নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ায় বিশেষ নজর দেওয়ার কথা জানান।
সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা: সড়ক-মহাসড়কে সকল প্রকার সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি দমন এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করে সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন।
যানজট নিয়ন্ত্রণ: শহরের প্রধান সড়কগুলোতে যানজট নিরসনে কার্যকর কৌশল অবলম্বনের ওপর জোর দেন।
কেবল প্রচলিত অপরাধ দমন নয়, বরং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নতুন ধরনের অপরাধ মোকাবিলায় তিনি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
তিনি বিশেষ করে:
বাল্যবিবাহ ও আত্মহত্যা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে পুলিশ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন।
সাইবার বুলিং ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতমুক্ত চুয়াডাঙ্গা বিনির্মাণে সকলের সহযোগিতা চাইলেন। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে বিপথগামী হওয়া থেকে রক্ষা করতে একটি সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম প্রকৃত ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় এবং পুলিশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গঠনে সহযোগিতা করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
তিনি দৃঢ়তার সাথে মত প্রকাশ করেন যে, পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে একযোগে কাজ করলে অপরাধ দমন ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা আরও সহজ ও কার্যকর হবে।
তিনি বলেন, "পুলিশ এবং সাংবাদিক উভয়ই সমাজের আরশিতে কাজ করি। আমাদের লক্ষ্য এক—আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তথ্য আদান-প্রদান এবং জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সাংবাদিকরাই আমাদের প্রধান সহযোগী।"
উক্ত পরিচিতি ও মতবিনিময় সভায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সকল পর্যায়ের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, নবনিযুক্ত পুলিশ সুপারের গতিশীল নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা জেলা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে আরও সুদৃঢ় অবস্থানে পৌঁছাবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ইয়াসির আরাফাত মিলন
স্বরস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ - প্রতিদিনের আলোচিত ক্ন্ঠ