মোঃ কামাল হোসেন খাঁন মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ ২৩ বছর কারাবাসের পর প্যারোলে মুক্তি পেয়ে পিতার জানাজায় অংশ নিয়েছেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মশিউর রহমান (ওরফে মশা)। শুক্রবার ভোরে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জুগিন্দা গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।
নিহত মনিরুল ইসলামের মেজো ছেলে মশিউর রহমান বর্তমানে মেহেরপুর জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। পিতার মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগ এবং ধানখোলা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যানের সুপারিশে জেলা প্রশাসনের অনুমতিক্রমে তাকে তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়।
জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০০৩ সালের ১০ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে মশিউর রহমান তার আপন চাচা আমিরুল ইসলামকে প্রকাশ্যে ঘাস কাটার আশুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। ঘটনার পর স্থানীয় জনসাধারণ তাকে ঘটনাস্থলেই আটক করে গাংনী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুজ্জামানের কাছে হস্তান্তর করে।
এ ঘটনায় নিহত আমিরুল ইসলামের বড় ছেলে মো. শামিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে মেহেরপুরের বিজ্ঞ দায়রা জজ আদালত মশিউর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তা মঞ্জুর হয় এবং মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে পিতা মনিরুল ইসলামের মৃত্যুর পর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিক্রমে সকালবেলা পুলিশ পাহারায় মশিউর রহমানকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। তিনি পিতার জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করেন এবং দাফন-কাফনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।
নির্ধারিত সময় শেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে পুনরায় মেহেরপুর জেলা কারাগারে হস্তান্তর করেন।
দীর্ঘদিন পর একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির পিতার জানাজায় অংশগ্রহণের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ইয়াসির আরাফাত মিলন
স্বরস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ - প্রতিদিনের আলোচিত ক্ন্ঠ