মোঃ নাঈম উদ্দীন স্টাফ রিপোর্টার, চুয়াডাঙ্গা। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ধরা পড়লো দর্শনার ত্রাস, স্বঘোষিত ‘ডন’ মুন্না।
যিনি তাঁর ডিসকাভার মোটরসাইকেলে চড়ে দর্শনা থেকে সীমান্ত পর্যন্ত দাপট দেখাতেন এবং এলাকার রাস্তাঘাট কাঁপিয়ে বেড়াতেন।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগের পর আইনের কড়া হাতে আজ এই অপরাধীর পতন হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে দর্শনা-চুয়াডাঙ্গার সাধারণ মানুষের মধ্যে।
গত ২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা ৩ টার সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জেলা কার্যালয়, চুয়াডাঙ্গার ‘ক’ সার্কেলের একটি চৌকস দল এই সফল অভিযানটি পরিচালনা করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এই অভিযানে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় মুন্নাকে। মুন্নার কাছ থেকে ২৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ২০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
অবৈধ মাদকদ্রব্যগুলো উদ্ধারের পর তাৎক্ষণিকভাবে তাকে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ।
গ্রেফতারকৃত মুন্না, হঠাৎ পাড়ার আবুল কালামের ছেলে, এলাকায় স্বঘোষিত ‘ডন’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দর্শনা রেল ইয়ার্ডকে তাঁর চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার মূল আখড়া হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মুন্না তাঁর ডিসকাভার মোটরসাইকেলের ঝলমলে হেডলাইটে অবৈধ টাকার অহংকার প্রকাশ করতেন এবং বেপরোয়া গতিতে ঘুরে বেড়াতেন।
তিনি শুধুমাত্র মাদক ব্যবসাতেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, বরং এলাকার তরুণ সমাজকে মাদকের পথে ঠেলে দিয়ে নিজের পকেট ভারি করতেন এবং সমাজে প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ মানুষের উপর ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন। তাঁর দাপটে এলাকার মানুষ তটস্থ থাকত এবং ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না।
মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর দীর্ঘদিন ধরেই মুন্নার এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের উপর কঠোর নজর রেখেছিল। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের অভিযোগ এবং মাদক নির্মূলের সরকারি অঙ্গীকারের জের ধরেই এই অভিযান পরিচালিত হয়।
মুন্নার গ্রেফতারের পর এলাকার সাধারণ মানুষ গভীর স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
দর্শনা-চুয়াডাঙ্গার জনগণ মনে করছেন, অপরাধের রাজত্ব যতই বড় মনে হোক না কেন, শেষমেশ পতন একদিন হবেই—এই ঘটনাই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ধৃত আসামী মুন্নার বিরুদ্ধে মাদক আইনে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেছে যে, মাদক নির্মূলে তাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং সমাজের সকল স্তরের মাদক কারবারিদের শিকড় উপড়ে ফেলা হবে।