মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উপলক্ষে চাঁদপুরে বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা জগন্নাথের প্রবেশপথে এবার পাকিস্তানের পতাকার পাশে আঁকা হলো ভারতের পতাকা আগমনী ট্রান্সপোর্টের অবহেলায় ক্ষতির মুখে বোয়ালমারীর ব্যবসায়ীরা মহান বিজয় দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি চাঁদপুর জেলা পুলিশের শ্রদ্ধা দর্শনায় ইয়াবা ও মোটরসাইকেলসহ যুবক আটক: মাদকবিরোধী অভিযানে ১৬০ পিস ইয়াবা জব্দ সলঙ্গা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস দালাল মুক্ত হওয়ায় গ্রাহকদের মাঝে ফিরে এসেছে স্বস্তি সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে বিএনপির মহান বিজয় দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহে ১৬ ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল  মহান বিজয় দিবস: চুয়াডাঙ্গায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের গভীর শ্রদ্ধা ধানমন্ডি বত্রিশে টাঙানো হলো হাদি ও ভাসানীর ছবি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় আলোচনা সভা: মেধাশূন্য করার অপচেষ্টা রুখে উন্নত দেশ গড়ার অঙ্গীকার

মোঃ নাঈম উদ্দীন স্টাফ রিপোর্টার, চুয়াডাঙ্গা। গভীর শ্রদ্ধা আর বেদনাবিধুর পরিবেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, রবিবার, সকাল ১০:৩০ ঘটিকায় এই সভার আয়োজন করা হয়। বক্তারা ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা পরিচালিত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত চেতনাকে ধারণ করে বৈষম্যহীন উন্নত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

জেলার বিভিন্ন সরকারি অফিস প্রধানগণ, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক এবং স্কুল-কলেজের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীবৃন্দের উপস্থিতিতে আলোচনা সভাটি পরিণত হয় এক ভাবগম্ভীর আয়োজনে।

আলোচনা সভায় বক্তারা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ করে বলেন, ১৯৭১ সালের মহান বিজয়ের ঠিক প্রাক্কালে, যখন পাকিস্তানের পরাজয় নিশ্চিত, ঠিক তখনই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসর—রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামস বাহিনী একটি সুপরিকল্পিত ও জঘন্য হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে।

তাদের মূল লক্ষ্য ছিল সদ্য স্বাধীন হতে যাওয়া জাতিকে মেধা ও মননশূন্য করে দেওয়া। বক্তারা গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন— কিভাবে বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের মতো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের চোখ বেঁধে নিজ নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর তাদের ওপর চালানো হয়েছিল নির্মম নির্যাতন এবং অবশেষে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড জাতির ইতিহাসে এক গভীর বেদনার অধ্যায়। এটি ছিল একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয়কে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়ার এক ঘৃণ্য চক্রান্ত। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ঘাতকেরা শুধু মানুষকেই হত্যা করেনি, তারা আসলে একটি জাতির ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ও সম্ভাবনাকে গলা টিপে হত্যা করতে চেয়েছিল।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, আজকের এই দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত— এই আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়।

তিনি নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানার গুরুত্ব আরোপ করেন।

বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, তাঁদের স্বপ্ন ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাওয়াটাই হলো শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন।

উপস্থিত সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষকেরাও একই সুরে সুর মিলিয়ে জাতি গঠনে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা অবিস্মরণীয় বলে উল্লেখ করেন এবং সাম্প্রদায়িকতা ও সকল প্রকার কূপমণ্ডূকতাকে পরাজিত করে একটি প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সকলে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।



লাইক করুন